রো‌হিঙ্গা সংকট : নতজানু পররাষ্ট্রনী‌তি দেখ‌ছে বিএন‌পি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রোহিঙ্গা সংকটে বিশ্ব সোচ্চার হলেও নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে কূট‌নৈ‌তিক উদ্যো‌গের মাধ্য‌মে সরকার কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না বলে মনে করছে বিএনপি।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে দল‌টির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই মন্তব্য ক‌রেন। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ ও বাংলাদেশের আশ্রয়ের দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন ক‌রে বিএন‌পি।

মির্জা ফখরুল ব‌লেন, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা নির্যাতিত রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্ব সোচ্চার হয়ে রুখে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে। এই সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারছে না। সরকার কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে ব্যর্থ হয়েছে।

‘জনগণের সরকার’ নয় বলেই রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ক্ষমতাসীনরা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির এই মুখপাত্র।

তিনি বলেন, ‘গণবিচ্ছিন্ন এই সরকারের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহি নেই। আমাদের দাবি কূটনৈতিক ভাবে মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করা হোক শরণার্থী রোহিঙ্গাদের সে দেশে ফিরিয়ে নিতে।’

লন্ডনে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গাদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তার নির্দেশেই আমরা আজ সারা দেশে মানববন্ধন করছি। এখানেও সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার একটি ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠিকে তারা তাদের দেশ থেকে নৃশংসতার মাধ্যমে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে- এটা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের কাছে কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। তারা নারী-পুরুষদের হত্যা করেছে এমনকি নবজাতককেও তারা রেহাই দেয়নি। এই পরিস্থিতি আমাদের একটি মাত্র সমাধান সেটা হচ্ছে, আমরা মানবতার হাত রোহিঙ্গাদের প্রতি বাড়িয়ে দেব এবং সারা বাংলাদেশের মানুষ এজন্য প্রস্তুত আছে।


‘সরকার যদি এই কঠিন সত্যকে স্বীকার না করে, তাহলে সরকার তাদের দায়িত্ব ছেড়ে পদত্যাগ করে এই দেশ থেকে চলে যাক- এই হচ্ছে আমাদের দাবি।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘দুঃখের বিষয় মিয়ানমারের এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। অথচ আমরা নিরাপত্তা পরিষদে এই বিষয়টি তুলতে পারিনি। এই ব্যাপারটিকে সেখানে নিয়ে যেতে হয়েছে জাতিসংঘের মহাসচিবকে। এর চেয়ে লজ্জার বিষয় আর কিছু হতে পারে না।’

জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ এই অমানবিকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার অথচ সেই দেশের কাছে খাদ্য-চাল আনতে গেছেন আমাদের খাদ্য মন্ত্রী সঙ্গে স্ত্রীকে নিয়ে। অর্থাৎ নাফ নদীর রক্তাক্ত লাশের ওপর দিয়ে কামরুল ইসলাম গেছেন মিয়ানমারে। কত বড় নতজানু এই সরকার, প্রতিবাদ করতে পারে না, তাদের কাছে অনুনয়-বিনয় করছেন।’

মানববন্ধনে ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, শাহজাহান ওমর (বীর বিক্রম), এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, আতাউর রহমান ঢালী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম।

এ ছাড়াও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভুইয়া জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলী, ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর